আপনারা সবাই ডেসটিনি করছেন করুন :( :( আমাকে বলবেন না । আমার বদহজম হয় ।




ডেসটিনির ডিসট্রিবিউটরদের ভেতরে ঢুকার দরকার নাই।(ঢুকলেও বাজে কমেন্ট করবেন না)

এটা ডেসটিনি নিয়ে কোন তথ্য বহুল রচন নয়। এটা হলো আমার চার পাশে যাদের কে ডেসটিনি করতে দেখেছি তাদের মধ্যে কি অবস্থায় আছে তার আসে তার সম্পর্কে একটু বয়ান । এর মধ্যে এক ফাকে আমি কিভাবে এই ফাদ থেকে বেরিয়ে এলাম তার সামান্য বর্ননা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

ডেসটিনির কথা আমি শুনি কলেজে পড়ার সময় । আমাদের মেসের এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে । উনার পারিবারিক অবস্থা একটু খারাপ ছিল । ফলে উনি টিউশনিকরে নিজের খরচ চালাতেন , প্রসংশাযোগ্য কাজ সন্দেহ নেই ।এই হাসান ভাই একদিন আমাদের মেসের সবাইকে ডেকে শুনালেন ডেসটিনি কি মহান দায়িত্ব নিয়েছে । দেশকে দরিদ্র শুন্য করার দায়িত্ব। আমারা সবাই অনেক নিষেদ করলাম হাসান ভাই টাকা গুলা নষ্ট করবেন না । হাসানভাই আমাদের কথা শুনলেন না তার চোখে তখন কোটি কোটি টাকার সপ্ন। সর্বশেষ ২০০৯ সালের জুলাই এর দিকে হাসান ভাইয়ের সাথে দেখ হয়েছিলো, তখন তিনি আমাকে বললেন “অলস রাজা (আসলে আমার নাম) ডিসেম্বরের মধ্যে গাড়ি কিনব এক্টা। আমি ভাবলাম ভালই হল হাসান ভাইয়ের অবস্থা ফিরল। মনে মনে একটু হিংসাও হলো,তখন মাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি, মধ্যবিত্ত পরিবারে যে কবে চাকরি করে গাড়ি কিনার টাকা জোগার করতে পারব বা আদৌ পারব কিনা তাই তো জানিনা ।হায় আফসোস!!কেন যে ডেসটিনি করলাম না !!!

আমার আফসোস গুচল। এইবার সেমিস্টার শেষের ছুটিতে বাড়িতে গেছি ২য় দিন আমার দূর সম্পর্কের এক কাকা আমাকে বললেন , তার সাথে এক জায়গায় যেতে হবে। আমি না বুজেই রাজি হলাম। পরের দিন উনি আমাকে নিয়ে গেলেন ডেস্টিনির এক ওয়ার্কশপে।২০০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকানো হলো(টাকা আমাকে দিতে হয়নি।)। হাসান ভায়ের গাড়ি কিনার কথায় যে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল তা ঊড়ে গেল। সারাদিন শেষে আমি অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলাম । কারন,তাদের চিন্তাভাবনা , দরিদ্রদের রক্তপান করে তা বিপনন করার অসুস্থ চিন্তা ভাবনা,তাদের ট্রেইনারের স্থুল অংগভংগি আর আগপিছু না ভাবা বেকারদের কোটি টাকার স্বপ্নের আস্ফালন আমাকে অসুস্থ করে দিল। আমি যখন চেয়ারে মাথা এলিয়ে দিয়েছি ট্রেইনার তখন আপেক্ষিকতার সুত্র, ই ইক্যুয়াল এমসি স্কয়ার ব্যবহার করে বেকারদেরকে বুজিয়ে যাচ্ছেন কিভাবে ১ বছরের মধ্যে তারা সবাই ৫০হাজারের বেশি করে আয় করবেন।(হাসবেন না কেউ,এটা সত্যি)

মাফ করবেন ডেস্টিনির ডিসট্রিবিউটররা ,একটা সত্যি কথা বলতেই হচ্ছে , আপনারা কেবল টাকা খরচ করে টাই বাধা শিখেছেন আর শিখেছেন ইয়েস বলতে।

যারা ডেস্টিনির ডিসট্রিবিউটর না তাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনার না বলা শিখুন । এমনকি অতি প্রিয়জন হলেও তাহলে হয়ত বেচে যাবেন !!

পাঠক অবশেষে হাসান ভায়ের খবর দিয়ে শেষ করি, হাসান ভায়ের গাড়ি কেনা হয়নি । উনি এখনও টিঊশনি করেন । আমি ওয়ার্কশপে গিয়ে শুনেছি ২০১২ সালের মধ্যে ডেসটিনি দেশ থেকে এক মহান বিপ্লবের মাধ্যমে দারিদ্র দূর করে দিবে। আমারও তাই মনে হয় , ডেস্টিনির ফাদে পরে যেভাবে দরিদ্ররা নির্মুল হয়ে যাচ্ছে এতে ২০১২ এর মধ্যে দরিদ্ররা শেষ হয়ে যাবে এ আর আশ্চার্য্য কি?!
দরিদ্ররা নেই তো দারিদ্রও নেই!!

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Categories

Powered By Blogger
abrahamalingkon

Social Icons

Popular Posts

Followers

Featured Posts

asbl. Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Copyright © / আসুন আমরা ইভটিজিং বন্ধ করি ।

Template by : Urang-kurai / powered by :ahb