Not-
Found
পৃথিবীর প্রথম নাস্তিক দেশটি কেমন ছিল? লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পৃথিবীর প্রথম নাস্তিক দেশটি কেমন ছিল? লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

পৃথিবীর প্রথম নাস্তিক দেশটি কেমন ছিল?

ছোটকালে শুনতাম ইউরোপের একমাত্র মুসলিম দেশ হল গিয়ে আলবেনিয়া। অথচ এটির ছিল পৃথিবীর প্রথম এবং একমাত্র নাস্তিক দেশ।
পৃথিবীর প্রথম নাস্তিক দেশটির আয়ুস্কাল ছিল ১৯৬৭সাল থেকে ১৯৯১সাল পর্যন্ত। সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয় আনোয়ার হোজ্জা, আলবেনিয়াকে পৃথিবীর প্রথম নাস্তিক দেশ (এথ্যায়িস্ট স্ট্যাট) সরকারি ভাবে হিসাবে ঘোষনা দেন।
সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পদ দখল করে নেয়া হয়া, ধর্মীয় নেতাদের বিদেশি শক্তিগুলোর সাথে সহযোগীতা বন্ধ করে দেয়া হয়। বিভিন্নভাবে তাদেরকে আক্রমনের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কাউকে পাঠানো হয় জেলে, কাউকে বাধ্য করা হয় কলকারখানায় কাজ করতে।
এসবকিছুর পরও ধর্মীয়গোস্টিকে দমনে ব্যর্থ হয়ে হোজ্জার পার্টি শিক্ষাপ্রতিস্ঠানে নাস্তিকীয় শিক্ষা প্রচারে মনোনিবশন করে।
রমজানের মত পবিত্রদিনগুলোতে তারা হারাম খাদ্য পরিবেশন করা শুরু করে কারখানা এবং শিক্ষা প্রতিস্ঠান গুলোতে। খাবার গ্রহনে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে লান্ছ্বিত করা হত। ১৯৬৭সালের ফেব্রুয়ারীতে আরো আক্রমনাত্বক পন্হা নেয় হয় নাস্তিকীয় শিক্ষা প্রচার করার জন্য।
যদিও হোজ্জা বলেন যে তিনি যে কোন সন্ত্রাসী পন্হা অবলম্বনের বিরোধী, তিনি চান বুঝিয়ে শুনিয়ে ধর্মের বিরুদ্ধে যে কোন একশন গ্রহনের শক্ত ভিত গঠন করা হোক।
এক্ষেত্রে তরুনদেরকে বেছে নেয়া হয়।
২,১৮৯টি মসজিদ এবং চার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়। নাস্তিকবাদ অফিসিয়াল পলিসিতে পরিনত হয়। ধর্মীয় নামের শহর, নগরগুলোকে নতুন নাম দেয়া হয়, ব্যক্তির নামও বদলে ফেলা হয়। ১৯৮২ মানুষের নামের ডিকশনারি বের করা হয়। যার মধ্যে ৩,০০০ সেক্যুলার নাম ছিল। এরা ক্ষমতায় আসার সময় ৩০০ প্রিষ্ট ছিলেন, যাদের মধ্যে মাত্র ৩০জন প্রানে বাচতে পেরেছিলেন।
সমস্ত ধর্মীয় আচার অনুস্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৯৬৭সাল থেকে ১৯৯১সাল পর্যন্ত এই নাস্তিক দেশটিতে যারা জন্ম নিয়েছিল তারা ধর্মের ব্যপারে কিছুই জানত না। তাই তাই তারা ছিল হয় নাস্তিক নয়ত এ্যাগোনস্টিক।
আনোয়ার হোজ্জাকে চিত্রায়িত করা হয় এমন একজন জিনিয়সা হিসাবে যিনি কিনা সংস্কৃতি, অর্থনীতি, সামরিক ইত্যাদি জীবনের প্রতিটি নৈতিক উপদেশ দান করে গেছেন। প্রত্যেকটা স্কুলের বইতে সে যে বিষয়ের উপরই হোক না কেন তার উক্তি উদ্ধৃত করা হত। . এক আলবেনিয়ান তাই আক্ষেপ করে বলেছিলেন ফিজিক্সের ক্লাসে মধ্যাকর্ষ শক্তির সুত্রটির জন্য কৃতিত্বটা পেতেন হোজ্জা যা ছিল কিনা নিউটনের পাওনা। আলবেনিয়া সিক্রেট পুলিশ এজেন্সি কে জি মত সবধরনের দমনমুলক পন্হা অবলম্বন করত। আলবেনিয়ার প্রতি তিনজন নাগরিকের একজনকে হয়ত লেবার ক্যাম্পে কাটাতে হত কিংবা সম্মুখীন হতে হত আলবেনিয়া সিক্রেট পুলিশ অফিসারদের জেরার। ভিন্ন মতালম্বীদের দমনের জন্য সিস্টেমেটিক সব পন্হা অবলম্বন করা হত। চাকুরিচ্যুত করা, লেবার ক্যাম্পে আটকে এবং প্রায়শ:ই মৃত্যদন্ড দেয়া। সরকারী কর্মকর্তাদের সরকারি সফর ছাড়া কাউকে বিদেশ যেতে দেওয়া হত না। পশ্চিমা নাচ নিষিদ্ধ ছিল, আর্টকে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল সোসালিস্ট রিয়ালিজমের মধ্যে।

১৯৮১সালে হোজ্জা অনেক পার্টির নেতা এবং সরকারী কর্মকর্তাকে শুলে চড়ান। প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শেহু এইসময় আত্মহত্যা করেন অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারনে। এটি ব্যপকভাবে বিস্বাস করা হয় যে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

১৯৮৫সালে হোজ্জা যখন মারা যান আলবেনিয়া তখন সারা বিশ্বের কাছে একটি নিষিদ্ধ দেশ, যারা বহির্বিশ্বের কাছে থেকে বিচ্ছিন্ন। তার শাসনামলের প্রায় সবটুকু জুড়েই আলবেনিয়া ছিল ইউরোপের সবচাইতে গরীব দেশ।

১৯৯০ সালে হোজ্জার প্রতিষ্ঠিত একদলীয় শাসনের অবসান ঘটে। ১৯৯২ সালে পরাজিত হয় সোসালিস্ট পার্টি।

আজ আলবেনিয়া হোজ্জা লিগ্যাসীর সামান্য কিছুই অবশিস্ট আছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা জনগনকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। আরও মজার ব্যপার আলবেনিয়া এখন ওআইসির সদস্য।

Posted by
Abraham Lingkon

More

Categories

Powered By Blogger
abrahamalingkon

Social Icons

Popular Posts

Followers

Featured Posts

asbl. Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Copyright © / আসুন আমরা ইভটিজিং বন্ধ করি ।

Template by : Urang-kurai / powered by :ahb